G-X8PRCEGCWT

বাঁশের সাঁকোতে ভরসা ১০ গ্রামের মানুষের

হবিগঞ্জ সংবাদদাতা
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৩
বাঁশের সাঁকোতে ভরসা ১০ গ্রামের মানুষের

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ৬নং রাজিউড়া ইউনিয়নের সাধুর বাজার এলাকাসহ আশপাশের অন্তত ১০ গ্রামের মানুষের চলাচলের ভরসা একটিমাত্র বাঁশের সাঁকো। যে সাঁকোটি দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে স্থানীয় হাজার হাজার বাসিন্দা। এছাড়াও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের এই সাঁকোটি দিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। ছরের পর বছর একটি সেতুর জন্য চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সবাইকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্বাচন এলে সেতু নির্মাণ করার আশ্বাস দেন জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু নির্বাচন চলে যাওয়ার পর এ বিষয়ে আর কেউ খোঁজ খবর রাখে না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাধুর বাজারের দক্ষিণ পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সুতাং নদী। আর সেই সুতাং নদীর উভয় পাশে রয়েছে অন্তত ১০ থেকে ১২টি গ্রাম। সেইসব গ্রামের মানুষের চলাচলের জন্য সুতাং নদীর উপর স্থানীয়দের উদ্যোগে নির্মাণ করা হয়েছে একটি বাঁশের সাঁকো। যা স্থানীয়দের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। সাঁকোটি দিয়ে ভঙ্গুর হাটি, বাগআছরা, বাগপুরি, ভাটি শৈলজুড়া, গুরাবই, সুত্রাপুর, কাটাখালি, চানপুর ও সুখচরসহ অন্তত ১২টি গ্রামের মানুষ যাতায়ত করে। প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের। বিশেষ করে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, অসুস্থ রোগী ও নারীরা পড়ছেন বেশি বিপাকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাধুর বাজারের দক্ষিণ পাশে সুতাং নদীর উপর অবস্থিত একমাত্র বাঁশের সাকোঁটি নড়বরে অবস্থায় দাড়িয়ে আছে। নদীর তলদেশ থেকে বাঁশের খুঁটির মাধ্যমে সেটিকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। সাঁকোটির উপর দিয়ে ভয় নিয়ে কোন রকম চলাচল করছেন সাধারণ লোকজন। কোন রকম চলাচল করা গেলেও সাঁকোটি দিয়ে আনা নেয়া করা যাচ্ছে না মালামাল। সন্তান কোলে নিয়ে নারীরা পারাপার হতে পারে না। অসুস্থ রোগীদেরও এই সাঁকো দিয়ে পার করা যায় না। স্কুলের ছোট শিক্ষার্থীরাও সাঁকো দিয়ে পার হতে ভয় পায়।
এ বিষয়ে কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা বিল্লাল আহমেদ, বাবুল আহমেদ, আব্দুল বারিক ও আব্দুল্লাহ মিয়াসহ একাধিক লোকজনের সাথে। তারা বলেন, সুতাং নদীর উপর একটিমাত্র সেতুর জন্য বছরের পর বছর আমাদের কষ্ট-দুর্ভোগ সহ্য করতে হচ্ছে। নির্বাচন এলেই জনপ্রতিনিধিরা আমাদের প্রতিশ্রুতি দেন, নির্বাচিত হলে সেখানে একটি সেতু নির্মাণ করে দেবেন। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর আর কোন জনপ্রতিনিধিই তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করেননি। যে কারণে ঘুরেফিরে বাঁশের সাঁকোটিই আমাদের শেষ ভরসা।
তারা বলেন, যদি এখানে একটি সেতু নির্মাণ করা হতো তা হলে আমাদের কষ্ট লাগবের পাশাপাশি আমাদের এলাকার ব্যবসা বাণিজ্যেরও প্রসার ঘটতো।
রাজিউড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বদরুল করিম দুলাল জানান, সাধুর বাজারের দক্ষিণে সুতাং নদীতে একটি ব্রিজের জন্য সেখানকার মানুষ অনেকদিন যাবত দাবি জানিয়ে আসছেন। এরই প্রেক্ষিতে আমি স্থানীয় এমপি এডভোকেট মো. আবু জাহির-এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করার পর একটি ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রায় ৩ কোটিরও অধিক টাকা ব্যয়ে ব্রিজ নির্মাণ কাজের পক্রিয়া চলমান আছে। তিনি বলেন, টেন্ডার হওয়ার পরপরই দ্রুত নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

শেয়ার করুন