নির্বাচন নিয়ে ‘অশোভন ভাষায়’ মন্তব্য করায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ক্ষমা চেয়ে ওই বক্তব্য প্রত্যাহার করতে বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কৃষক লীগের তিন মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
২০১৪ সালের ১৬ নভেম্বর নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলা টাউন হলে জেলা বিএনপির সম্মেলনে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে ‘কুত্তা মার্কা’ নির্বাচন বলে আখ্যায়িত করেছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি (ফখরুল) বলেন, ওই নির্বাচনে ভোটার ছিল না, কুকুর-বিড়াল ছিল। এ কারণে এর কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। চলতি বছরের বুধবার (১৪ জুন) চট্টগ্রামের কাজির দেউড়িতে ‘দেশ বাঁচাতে তারুণ্যের সমাবেশে’ বিএনপির মহাসচিব বলেছেন, আমেরিকার স্যাংশনে সরকারের হাঁটু কাঁপতে শুরু করেছে। আর এবার যদি কুত্তা মার্কা নির্বাচন করো (শেখ হাসিনা), তোমার রেহাই নেই।
এই বক্তব্যের জবাবে আজ বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিবের কি বিশ্রী মন্তব্য! বিষাক্ত কথা! কী করে বের হয়! দেশের সুষ্ঠু নির্বাচনকে বলে কুত্তা মার্কা নির্বাচন। তিনি কি গাজীপুর, বরিশাল, খুলনা, কক্সবাজারের নির্বাচন দেখেননি? সুষ্ঠু নির্বাচনকে বিএনপি বলে কুত্তা মার্কা নির্বাচন।’
বিএনপি মহাসচিবের ওই বক্তব্য নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এ শব্দ ব্যবহার করার পরও মার্কিন ভিসানীতি এখানে কী করবে? এটা তো সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা।’
চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ছবি বিএনপি ভাঙচুর করেছে—এমন অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজ যারা বিদেশ থেকে কথা বলছেন, এই ঘটনায় তারা কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন? এটা কি সুষ্ঠু নির্বাচনে অন্তরায় নয়? এটা কারা করেছে- বিএনপি ও তার দোসররা।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করবে, গ্রেফতার করা হলে বলবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে! বিনা বিচারে আটক, অভিযোগের অন্ত নেই।’ চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুরকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি উপর্যুপরি আন্দোলনে ব্যর্থ হওয়ায় মরহুম ডাক্তার জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিএনপিকে বলেছিলেন হাঁটুভাঙা দল। আমাদের হাঁটু ভাঙেনি। নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয়ে বিএনপির হাঁটুর কাঁপুনিও শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগ কাউকে ভয় পায় না, আমাদের ইমানের শক্তি আছে, দেশপ্রেম আছে। আওয়ামী লীগের শক্তির উৎস দেশের জনগণ।’
তিনি বলেন, ‘যারা রাজনীতির নামে বড় বড় কথা বলে, মিথ্যাচার করে, বিদেশিদের কাছে নালিশ করে বাংলাদেশ যাতে আরও কষ্টে নিপতিত হয়। যাতে বাংলাদেশ সক্ষমতার সঙ্গে চলতে না পারে। আজ বাংলাদেশের নির্বাচনে শুধু বাংলাদেশে নয়, বাংলাদেশের বাইরে থেকেও খেলা চলছে, চক্রান্ত চলছে। কোটি কোটি টাকা দিয়ে লবিস্ট নিয়োগ করছে। ক্ষমতায় না থাকলেও তাদের সে অর্থ আছে। লবিস্ট নিয়োগ করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ছয় সদস্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ছয় কংগ্রেসম্যানের চিঠিতে বলা হচ্ছে- বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। দেশটা আমাদের, মাথাব্যথা তাদের।’
কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি প্রমুখ। পরে কৃষক লীগের বিভিন্ন জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে গাছের চারা বিতরণ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।