চট্টগ্রামে হাটহাজারি মাদরাসা পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, হেফাজতে ইসলামের কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তির জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। তারা (হেফাজত) যে তালিকা দিয়েছে, সে তালিকা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে নেতাকর্মীরা মুক্তি পাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে হাটহাজারি মাদরাসা পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
গত মঙ্গলবার গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, নেতাকর্মীদের মুক্তি দেওয়া না হলে ঈদের পর আন্দোলন করা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হেফাজতে ইসলামের যারা গ্রেফতার হয়েছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। যারা এখনো মুক্তি পাননি তারা পযাক্রমে মুক্তি পাবেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু এ দেশে ইসলাম বিস্তারে কাজ করে গেছেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন, টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমাসহ ইসলামের জন্য নানা কল্যাণকর কাজ করেছেন তিনি। এখন করছেন তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। এমনকি তাহাজ্জুদের নামাজও পড়েন।
মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী কখনো বলেননিই- নুরানি মাদরাসা বন্ধ করবেন। আরও কীভাবে নুরানি মাদরাসা চলবে, কীভাবে ধর্ম প্রচার করা যায় সেগুলো নিয়ে প্রধানমন্ত্রী চিন্তা করেন। সরকার কোনো মাদরাসা বন্ধ করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না। এই সরকার মাদরাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী করে তুলতে কাজ করছে। কওমি মাদরাসা একটি বোর্ডের আওতায় পরিচালিত হয়। সরকার এতে হস্তক্ষেপ করে না।
হাটহাজারী মাদরাসায় সফরের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, এখানে মাওলানা শাহ আহমদ শফীর কবর রয়েছে। অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল, তার কবর জিয়ারত করবো। আজ কবর জিয়ারত করতে এসেছি।
তিনি বলেন, জঙ্গিবাদের উত্থানের পর সবাই বলেছিল, কওমি মাদরাসা থেকে জঙ্গিরা আসে। কিন্তু আমরা বলেছিলাম কওমি মাদরাসায় ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক মাওলানা ইয়াহিয়া, সহকারী পরিচালক মুফতি জসিম উদ্দিন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এম এ সালাম প্রমুখ।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া পাঁচটায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হাটহাজারী মাদরাসায় পৌঁছে মসজিদে আছরের নামাজ আদায় করেন। এরপর মাদরাসার সাবেক মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের প্রয়াত আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী ও হেফাজতের সাবেক মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর কবর জিয়ারত করেন। এরপর হাটহাজারী মাদরাসার বর্তমান মহাপরিচালক মাওলানা ইয়াহিয়াসহ শীর্ষ আলেমদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।