মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের প্রতি ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘কারও ভিসানীতি, কারও নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশের নির্বাচন ঠেকানো যাবে না। আমরা কারও ওপর হস্তক্ষেপ করি না। আমাদের নির্বাচনে বাইরের কোনও দেশের হস্তক্ষেপ চাই না। আমাদের স্বাধীন নির্বাচন কমিশন আছে, নিয়ম-কানুন মেনে নির্বাচনে যাচ্ছি। নির্বাচনের সময় নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান শেখ হাসিনাই থাকবেন।’
শুক্রবার (১৬ জুন) বিকালে রাজধানীর মিরপুর ১০ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি আবারও ‘ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাস’ শুরু করছে মন্তব্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা যে হাতে হামলা করবে, সেই হাত ভেঙে দিতে হবে। যে হাতে আগুন লাগাতে আসবে, সেই হাত পুড়িয়ে দিতে হবে।’
দেশে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে বিএনপি জঙ্গিদের আশ্রয় দিয়েছে— এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘যারা এ দেশে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে, যারা পরপর কয়েকবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে; সেই অপশক্তি হচ্ছে বিএনপি। এই অপশক্তির হাতে আমরা ক্ষমতা ছেড়ে দিতে পারি না। তাদের হাতে বাংলাদেশের দায়িত্ব, নিরাপত্তা ও ক্ষমতা আমরা ছেড়ে দিতে পারি না।’
বিএনপি ক্ষমতা থাকতে ‘ভোট চুরি’ করছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা ক্ষমতায় থাকতে গণতন্ত্র, আইনের শাসন গিলে খেয়েছে, ভোটচুরি করেছে, পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশকে দুর্নীতিবাজ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তারা আবার ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশ গিলে খাবে, মুক্তিযুদ্ধ-স্বাধীনতাকে গিলে খাবে। আর নয় হাওয়া ভবন, খালেদা জিয়ার দুঃশাসন, বিএনপির অপরাজনীতি— এটাই আমাদের শপথ।’
বিএনপির নিজেদের দলের ওপরই নিয়ন্ত্রণ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তার কথায় তাদের প্রার্থীরা সরে দাঁড়াননি। যতই ষড়যন্ত্র করুক, নির্বাচন হবে, ইনশাল্লাহ। নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ফল তারা জানে। এখন বিএনপির অনেক নেতা আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে জায়গায় জায়গায় দৌড়ঝাঁপ করছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির অনেক নেতা তলে তলে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ জন্য বিভিন্ন জায়গায় তারা দৌড়ঝাঁপ করছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপিও আসবে। অনেক দল আসবে। দলের অভাব হবে না। বিএনপি যতই ষড়যন্ত্র করুক, নির্বাচন এ দেশে হবেই।‘
তিনি বলেন, ‘বিএনপি জানে আগামী নির্বাচনে তাদের হেরে যাওয়ার ভয়। এ জন্য তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। টাকা-পয়সা দিয়ে লবিস্ট নিয়োগ করে। এত টাকা তারা কোথায় পায়?’
নির্বাচনের আগে কোন দেশে পার্লামেন্ট বিলুপ্ত হয়— এমন প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশে কেন হবে? নির্বাচন শেষে পার্লামেন্ট ভাঙ্গবে। আমাদের সংবিধান আছে। সংবিধানে যেভাবে আছে সেভাবে চলব। কারো পরামর্শে চলব না। পর্যবেক্ষক পাঠাতে পারেন দেখতে পারেন কেমন নির্বাচন হচ্ছে।’
নির্বাচনের ওপর দেশের মানুষ আস্থাশীল— এমন দাবি করে তিনি বলেন, ‘সেই নির্বাচন নিয়ে বিএনপির কথায় বিভ্রান্ত হবেন না। বিএনপি এখন বেসামাল হয়ে পদযাত্রায়। এই পদযাত্রা শেষ পর্যন্ত পতন যাত্রায় রুপ নিবে। বিএনপির আর কোন পথ নেই।’
‘বিএনপি এখন ফাউল শুরু করেছে’ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চট্টগ্রামে জাতির পিতার ছবি কারা ভাঙচুর করেছে? মহান মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিচিহ্নের ওপর হামলা চালিয়েছে কারা? তারা বিএনপি। তারা পুরনো সন্ত্রাস, পুরনো হাওয়া ভবন, পুরনো ভোটচুরি- এরা কে? বিএনপি।’
লোডশেডিং কমে গেছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকদিন পর পুরোপুরি লোডশেডিং চলে যাবে। শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখুন। দুর্দিন কেটে যাবে।’
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুল রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি প্রমুখ।