মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় কোরবানির পশুর চামড়া কম দামে বিক্রি হওয়াতে বিপাকে পড়েছে মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলো। ঈদের দিন (২৯ জুন) বিকেলে মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলো গরুর চামড়া বিক্রি করেছে প্রতি পিস ২শ থেকে আড়াইশ টাকার মধ্যে। ছোট চামড়ার দাম ছিলো মাত্র ১শ-দেড়শ টাকা।
অপরদিকে, ছাগলের চামড়া বিক্রি হয়েছে প্রতি পিস গড়ে ৬০ টাকা করে।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানায়, দরিদ্র ও এতিম তহবিলের বড় আয়ের উৎস এই চামড়া থেকে আসে।
কোরবানির চামড়া সংগ্রহকারী বিভিন্ন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানায়, মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলোর আয়ের বড় উৎস কোরবানির পশুর চামড়া। এসব চামড়া বিক্রির অর্থ দিয়ে মাদ্রাসার লিল্লাহ বোর্ডিং ও এতিমখানার ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখার খরচ ও খাবারের ব্যবস্থা হয়ে থাকে। কিন্তু চামড়ার দাম কম হওয়ায় আর্থিক সংকট হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলার কর্মধা টাইটেল মাদ্রাসার মুহতামিম ইউনুস আহমদ জানান, দরিদ্র ও এতিম শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ও থাকা-খাওয়ার খরচ দরিদ্র তহবিল থেকে দেওয়া হয়। দরিদ্র ও এতিম তহবিলের বড় আয়ের উৎস চামড়া থেকে আসে। এবার চামড়া মাদ্রাসায় কিনতে কেউ আসেনি। এ জন্য জেলা শহর মৌলভীবাজারে বিক্রির জন্য নিতে হবে।
হায়দরগঞ্জ বালক-বালিকা টাইটেল মাদ্রাসা ও এতিমখানার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা জুনেদ আহমদ বলেন, এতিমখানা ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ও খাবারের ব্যবস্থা চামড়া বিক্রির টাকা দিয়ে করা হয়। এবার চামড়া সংগ্রহ হলেও দাম কম হওয়ায় আমাদের বিপাকে পড়তে হবে।
জোয়াদ আলী নামে এক চামড়া বিক্রেতা জানান, এবার অনেক মাদ্রাসা চামড়া উত্তোলন করেনি। গতবছর দাম কম পাওয়ায় এবার অনেক মাদ্রাসায় চামড়া পাওয়া যায় নি।
মৌসুমি ব্যবসায়ীরা জানান, চামড়া কিনে আবার ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করতে হয়। এরপর ট্যানারি মালিকরা এ চামড়ায় লবণ দেন। সেখানেও রয়েছে একটি খরচ। ফলে তৃণমূল পর্যায় থেকে কম দামেই চামড়া কিনতে হয়।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মো. জাকারিয়া বলেন, জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে যাতে কেউ চামড়া পাচার করতে না পারে- এ জন্য পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম বলেন, ঈদের আগে চামড়া ব্যবসায়ীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে।
কোনো চামড়া যেনো নষ্ট না হয়- এ জন্য ব্যবসায়ীদের চামড়া কিনতে অনুরোধ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।