গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের প্রক্রিয়া আইনানুগ ছিল না বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে জারি করা রুল চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি করে রবিবার (১৮ জুন) বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে জাহাঙ্গীরের পক্ষে সময় আবেদন করেন ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন ও আইনজীবী সাজ্জাদ উল ইসলাম। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম এম জি সারোয়ার পায়েল।
রায়ের পর আইনজীবী সাজ্জাদ উল ইসলাম জানান, আদালত রিট মামলাটি নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন। রায়ে আদালত পর্যবেক্ষণ দিয়ে বলেছেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত গ্রহণে যথাযথ আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। তবে পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও নিজ জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে নিয়ে গাজীপুর সিটির তৎকালীন মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিতর্কিত বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এর জেরে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয় তাকে। পরে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হলেও সম্প্রতি তাকে আবার স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
প্রথমবার আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের পর মেয়র পদ থেকেও সাময়িক বরখাস্ত হন জাহাঙ্গীর আলম। ২০১৮ সালের নির্বাচনে নৌকার টিকিটে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর তাকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর ২০২২ সালের ১৪ আগস্ট পদ ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন তিনি। রিটে তাকে সাময়িক বরখাস্তের আইনগত বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে এ রিট দায়ের করেন ব্যারিস্টার মশিউর রহমান সবুজ।
পরে ২০২২ সালের ২৩ আগস্ট গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। স্থানীয় সরকার সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
গত ১৫ মার্চ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের শুনানি শুরু হয়। তবে মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের রায় কয়েক দফা পেছানো হয়।