G-X8PRCEGCWT

জেনে নিন ভূমিকম্পের কারণ ও করণীয়

একাত্তর ডেস্ক
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩
জেনে নিন ভূমিকম্পের কারণ ও করণীয়

প্রতীকী ছবি

তুরস্ক-সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। দেশ দুটিতে আরও ভবন ধসে পড়ার শঙ্কা আছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল তুরস্কের কাহরামানমারাস থেকে ৬৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে। ১৯৯৯ সালে ইস্তাম্বুলের কাছে জনবহুল পূর্ব মারমারা সাগর অঞ্চলে আঘাত হেনেছিল একই মাত্রার একটি ভূমিকম্প। ওই ঘটনা ১৭ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ নিয়েছিল।

ভূমিকম্প কী ও কেন হয়?
ভূমিকম্প হচ্ছে ভূমির কম্পন। ভূ অভ্যন্তরে যখন একটি শিলা অন্য একটি শিলার উপরে উঠে আসে তখন ভূমি কম্পন হয়। পৃথিবীপৃষ্ঠের অংশ বিশেষের হঠাৎ অবস্থান পরিবর্তন বা আন্দোলনই ভূমিকম্পন। গবেষকদের মতে, বিশ্বে বছরে গড়ে ছয় হাজার ভূমিকম্প হয়। এগুলোর বেশিরভাগই মৃদু, যা আমরা টের পাই না। সাধারণত তিন ধরনের ভূমিকম্প হয়- প্রচণ্ড, মাঝারি ও মৃদু। আবার উৎসের গভীরতা অনুসারে ভূমিকম্পকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়- অগভীর, মধ্যবর্তী ও গভীর ভূমিকম্প।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ভূ-পৃষ্ঠের ৭০ কিলোমিটারের মধ্যে হলে অগভীর, ৭০ থেকে ৩০০ কিলোমিটারের মধ্যে হলে মধ্যবর্তী ও ৩০০ কিলোমিটারের নিচে হলে তাকে গভীর ভূমিকম্প হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
ভূ অভ্যন্তরে স্থিত গ্যাস যখন ভূ পৃষ্ঠের ফাটল বা আগ্নেয়গিরির মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে তখন ওই গ্যাসের অবস্থান ফাঁকা হয়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে পৃথিবীর উপরের তলের চাপ ওই ফাঁকা স্থান দখল করে নেয়। এক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় না থাকায় ভূ-পৃষ্ঠে প্রবল কম্পনের অনুভব হয় যা ভূমিকম্প নামে পরিচিত।
সাধারণত তিনটি প্রধান কারণে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়- ভূ পৃষ্ঠের হঠাৎ পরিবর্তন, আগ্নেয়গিরি সংঘটিত হওয়ার কারণে ও শিলাচ্যুতিজনিত কারণে।
ভূমিকম্পের স্থায়িত্ব সাধারণত কয়েক সেকেন্ড হলেও এর মধ্যেই ঘটে যেতে পারে বিরাট অঘটন। যেমনটি ঘটেছে তুরস্ক-সিরিয়ার ভূমিকম্পের ঘটনায়।

ভূমিকম্প পরিমাপ করা হয় কীভাবে?
ভূমিকম্পের মাত্রা নির্ণয়ের জন্য যে যন্ত্র ব্যবহৃত হয় তার নাম রিখটার স্কেল। রিখটার স্কেলে এককের সীমা ১ থেকে ১০ পর্যন্ত। এই স্কেলে মাত্রা ৫ এর বেশি হওয়া মানেই ভয়াবহ দুর্যোগের আশঙ্কা।
ভূমিকম্প এক ডিগ্রি বাড়লে এর মাত্রা ১০-৩২ গুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৫ থেকে ৫ দশমিক ৯৯ মাঝারি, ৬ থেকে ৬ দশমিক ৯৯ তীব্র, ৭ থেকে ৭ দশমিক ৯৯ ভয়াবহ ও ৮ এর উপর অত্যন্ত ভয়াবহ।

ভূমিকম্প হলে দ্রুত যা করবেন-

>> ভূমিকম্প টের পেলে বা খবর পেলে সঙ্গে সঙ্গে ফাঁকা স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিন।

>> উঁচু ভবনে থাকলেও বের হতে না পারলে শক্ত কোনো খাম্বার নিচে অবস্থান নিন।

>> মানসিকভাব অস্থির না হয়ে ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবেলা করুন।

>> বহুতল ভবনে একই জায়গায় অনেক মানুষ একসঙ্গে না থেকে ভাগ হয়ে আশ্রয় নিন।

>> মুঠোফোনে ফায়ার সার্ভিস ও দরকারি মোবাইল নম্বরগুলো আগের থেকেই রেখে দিন।

>> দ্রুত নামার জন্য ভবন থেকে লাফিয়ে পড়বেন না।

>> ভূমিকম্পের সময় সম্ভব হলে মাথার ওপর শক্তকরে বালিশ অথবা অন্য কোনো শক্ত বস্তু কাঠবোর্ড, নরম কাপড় চোপড়ের কুণ্ডলি ধরে রাখুন।

>> গ্যাস ও বৈদ্যুতিক সংযোগ থেকে দূরে অবস্থান নিন।

>> ভূমিকম্পের সময় উঁচু ভবন থেকে দ্রুত নামতে লিফট ব্যবহার করবেন না।

>> এ সময় গাড়িতে থাকলে ফাঁকা স্থান বেছে নিন ও গাড়িতেই থাকুন।

>> একবার ভূমিকম্পের পরপরই আরেকটি ছোট ভূমিকম্প হয় যাকে বলে আফটার শক। এজন্য এর পরের কয়েক ঘণ্টা সতর্ক থাকুন ও নিরাপদ স্থান বেছে নিন।

শেয়ার করুন