প্রায় ৮৪ বছর পর সোমবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) তুরস্কে আবারও ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। সোমবার ভোরে তুরস্ক ও সিরিয়ায় একযোগে রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। এতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১২শ ৯৮ জন। আহত হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৫০০। অনেকে এখনো ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়ে আছে।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ভূকম্পনবিদ স্টিফেন হিকস বলেন, এর আগে ১৯৩৯ সালের ডিসেম্বরে তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। ওই সময় ৩০ হাজার মানুষের প্রাণহাণি ঘটে। এ ঘটনার পর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে তুরস্কের পূর্বাঞ্চলীয় এলাজিগ শহরে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ৪১ জন নিহত হয়েছিল। সে সময় আহত হয়েছিল এক হাজার ছয় শতাধিক মানুষ।
সিরিয়ার জাতীয় ভূকম্পন কেন্দ্রের প্রধান রায়েদ আহমেদ রাষ্ট্রীয় বেতার স্টেশনকে বলেন, ‘আমাদের এই কেন্দ্রের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প।’ ১৯৯৫ সালে কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানায়, স্থানীয় সময় আজ ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। ভূমিকম্পটি যখন আঘাত হানে, তখন বেশির ভাগ মানুষই ঘুমে ছিল।
তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতায় বলেন, এখন পর্যন্ত দেশটিতে ২৮৪ ব্যক্তি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে দুই হাজার তিন শর বেশি মানুষ।
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত তুরস্কের বিভিন্ন শহরে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে বলে জানান দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট। তবে শীতকালীন তুষারঝড়ের কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। তুষারে অনেক সড়ক ঢেকে গেছে।
এদিকে ভূমিকম্পে তুরস্কের প্রতিবেশী দেশ সিরিয়ায় অন্তত ২৪৫ ব্যক্তি নিহত হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আলেপ্পো, লাতাকিয়া, হামা ও তারতুস প্রদেশে ২৩৭ জন নিহত হয়েছে, আহত ছয় শতাধিক। এগুলো সিরিয়ার সরকারনিয়ন্ত্রত এলাকা। আর তুর্কিপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠী–নিয়ন্ত্রিত দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় এলাকায় অন্তত আটজন নিহত হওয়ার তথ্য দিয়েছে স্থানীয় একটি হাসপাতাল।