দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন দুদকের সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদেরও সদস্য। অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ তিনি। রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে তাকে নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দপ্তরে যান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি টিম। সেখানে মনোনয়ন ফরম তোলা ও জমাদানের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হয়।
এর আগে সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর মনোনয়ন চূড়ান্ত করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে সবকিছু ঠিক থাকলে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতিই হতে যাচ্ছেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। তিনি বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের উত্তরসূরি হবেন।
এর আগে ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় বারের মতো রাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার নেন মো. আবদুল হামিদ। সেই অনুযায়ী তার পাঁচ বছরের মেয়াদ ২৩ এপ্রিল শেষ হবে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন আজ রোববার। এদিন বিকেল ৪টার মধ্যে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে। এরপর সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে। পরদিন মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রত্যাহার করা যাবে মনোনয়নপত্র।
মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু একাধারে আইনজীবী, অধ্যাপক, সাংবাদিক ও বিচারক ছিলেন। ৭৫র’ পর বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করায় ২০ আগস্ট সামরিক আইনের ৭ ধারায় আটক হয়ে প্রায় তিন বছর কারাগারে কাটিয়েছেন তিনি। ১৯৪৯ সালে পাবনায় জন্ম তার। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষাজীবন শেষ করেন তিনি।
ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) বিভাগে যোগদান করেন এবং ১৯৯৫ সালে জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।
এছাড়া মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের কর্মকাণ্ডের অনুসন্ধানে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে ছিলেন।
অধুনালুপ্ত বাংলার বাণী পত্রিকার পাবনা জেলা প্রতিনিধি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। পাবনা প্রেস ক্লাব ও অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরির আজীবন সদস্য তিনি।
ব্যক্তিগত জীবনে এক ছেলে সন্তানের বাবা সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। তার স্ত্রী প্রফেসর ড. রেবেকা সুলতানা সাবেক যুগ্ম সচিব। তিনি বর্তমানে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
সূত্র : জাগো নিউজ