বিশ^নাথে পাঁচ মাস ধরে ভবঘুরে জীবন যাপন করছেন এক যুক্তরাজ্য প্রবাসী। ভূমিখেকোরা তার কষ্টার্জিত টাকায় বানানো বাড়িতে উঠতে দিচ্ছে না। বরং, হুমকি-ধমকি ও মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বিশ^নাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের মান্দারুকা গ্রামের বাসিন্দা ও ব্রিটিশ নাগরিক হাজী মো. আনোয়ার আলী।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘নিজের কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে তৈরি বিল্ডিং এবং সাজানো খামার বাড়ি থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে দেশে এসে বিভিন্ন জায়গায় ভবঘুরে জীবনযাপন করছি। একটি ভূমিখেকো চক্র আমার বাড়িসহ সব সম্পত্তি দখল করে রেখেছে।’
তিনি অভিযোগ করেন, এই চক্রে বাড়িটি দেখাশোনার জন্য কেয়ারটেকার হিসেবে রেখেছিলেন তিনি। তারাই এখন তার জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক অভিযোগ দিয়েও সুরাহা পাচ্ছেন না বলে জানান আনোয়ার আলী।
তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘পরিবার নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে যুক্তরাজ্যে বসবাস করি। মাঝেমধ্যে বেড়াতে দেশে আসি। আমার সৎ ভাই চমক আলীর সন্তানেরা বাড়ির পূর্ব ভিটায় বসবাস করতেন। প্রায় আট বছর আগে মূল ভিটায় একটি নতুন বিল্ডিং তৈরি করি। কয়েক বছর আগে আমার বোন যুক্তরাজ্য থেকে দেশে এসে চমক আলীর ছেলে আক্তার মিয়া, তার মা পিয়ারা বেগম এবং বোনদেরকে বাড়ির পূর্ব ভিটা থেকে এনে আমার তৈরি করা বিল্ডিংয়ে রেখে যান; যাতে তারা দেখাশোনা করে এবং নিরাপদে থাকতে পারে।’
আনোয়ার আলী বলেন, ‘এর সুবাদে তারা আমার বিল্ডিংয়ে বসবাস করছিল। গত সেপ্টেম্বর মাসে দেশে এসে আমি আমার বাড়িতে গেলে তারা আমাকে ঘরে উঠতে দেয়নি। দেশে আসার আগে আখতারের ভাই লন্ডনে বসবাসরত শ্যামল মিয়া আমাকে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেÑ দেশে গেলে বাড়িতে উঠতে পারবে না, হামলা-মামলায় তোমার জীবন দুর্বিষহ হবে। এমনকি প্রাণে মারার হুমকিও দেয়।’
তিনি বলেন, ‘দেশে এসে দেখি শ্যামলের কথার মিল আছে। তার ভাই আখতার ঠিকই আমাকে বাড়িতে উঠতে দেয়নি। আখতারের সাথে তার ভাই নুর উদ্দিন, তাদের মা পিয়ারা বেগম, বোন ঝর্ণা বেগম, হুসনা বেগম, জোছনা বেগম এবং জেছনারা বেগম ও তাদের ছেলেমেয়েরা আমাকে ভয়ভীতি দেখায় এবং প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।’
তিনি জানান, এ ঘটনায় গত ৩ আগস্ট বিশ্বনাথ থানায় সাধারণ ডায়েরি করলে বিশ্বনাথ থানার ওসি তাদেরকে বিষয়টি আপোষে নিষ্পত্তি করার জন্য অনুরোধ জানান এবং থানায় যেতে বলেন। থানায় গেলেও তারা ওসির কথা না শুনে বের হয়ে যায়। একইভাবে গোষ্ঠীর লোকজন ও গ্রামের মুরব্বীরা বারবার সমাধানের উদ্যোগ নিলেও তারা কারো কথা মানে না। সালিস বৈঠকও অমান্য করে।
আখতারের দুই ভাইকে লন্ডন এবং একজনকে সৌদি আরবে পাঠিয়েছেন জানিয়ে আনোয়ার আলী বলেন, ‘সবাইকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা সত্ত্বেও তারা এখন ধনে বলে বলীয়ান হয়ে আমাকে মানসিক ও শারিরীকভাবে নির্যাতন করছে। একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। ইতোমধ্যে দুটি মামলা চলমান রয়েছে।’
এসব মামলা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করে তিনি বলেন, ‘বরং তারা আমার বাগান বাড়ির মূল্যবান গাছপালা কেটে নিয়ে গেছে। বাগান বাড়িটিও তারা জোরপূর্বক দখল করতে চায়। আমি বাগান বাড়িতে কিছু করতে গেলে তারা বাধা দেয়।’
আখতার ও নুর উদ্দিনসহ তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে তিনি সিলেটের ডিআইজি, পুলিশ সুপার এবং প্রবাসী সেলে লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন বলে জানান আনোয়ার আলী।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি প্রবাসীবান্ধব সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতা কামনা করেন। একইসাথে দেশের প্রশাসনের উর্ধ্বতন মহলের সুদৃষ্টি কামনা করেন।