তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত এলাকা। ছবি : রয়টার্স
তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯১২-তে দাঁড়িয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এ তথ্য জানিয়েছেন। এই ভূমিকম্পের আঘাতে পাশের দেশ সিরিয়ায় অন্তত ৩৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। খবর এএফপি ও আল–জাজিরার
স্থানীয় সময় সোমবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে এই ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল সিরিয়া সীমান্তবর্তী তুরস্কের গাজিয়ানতেপ শহরে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। প্রায় ৮৪ বছর পর এমন শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক। দুই দেশেই হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভূমিকম্পের পর রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেন, এখন পর্যন্ত তুরস্কে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯১২ হয়েছে। এ ছাড়া ৫ হাজার ৩৮৩ জন আহত হয়েছেন। নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে কত হতে পারে, সে সম্পর্কে কোনো ধারণা দিতে পারছেন না তিনি।
এদিকে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশটির সরকারনিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে ভূমিকম্পে অন্তত ২৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৬৪৮ জন। এই অঞ্চলগুলোর মধ্যে রয়েছে আলেপ্পো, হামা, লাতাকিয়া ও তারতুসের মতো শহরগুলো।
সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে হতাহতের খবর দিয়েছে এসব অঞ্চলে উদ্ধারকাজ চালানো দল হোয়াইট হেলমেট। এক টুইট বার্তায় তারা বলছে, ভূমিকম্পে সেখানে অন্তত ১৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৩৪০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। এখনো অনেক পরিবার ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছে। তাই হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
ভূমিকম্পটি যখন আঘাত হানে, তখন বেশির ভাগ মানুষই ঘুমিয়ে ছিলেন। সিরিয়ার জাতীয় ভূকম্পন কেন্দ্রের প্রধান রায়েদ আহমেদ রাষ্ট্রীয় বেতার স্টেশনকে বলেন, ‘আমাদের এই কেন্দ্রের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প।’ ১৯৯৫ সালে কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ভূকম্পনবিদ স্টিফেন হিকস বলেন, এর আগে ১৯৩৯ সালের ডিসেম্বরে তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। ওই সময় ৩০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এ ঘটনার পর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে তুরস্কের পূর্বাঞ্চলীয় এলাজিগ শহরে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ৪১ জন নিহত হয়েছিল। সে সময় আহত হয়েছিল ১ হাজার ৬০০–এর বেশি মানুষ।