লন্ডনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থাকা মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের দাবীতে হিউম্যানরাইট এ্যালায়েন্স পূর্বলন্ডনে মানববন্ধন করেছে।
আন্তর্জাতিক গুম দিবসে হিউম্যানরাইট এ্যলায়েন্স আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেছেন বাংলাদেশের চিহ্নিত মানবতাবিরোধী অপরাধী ও তাদের দোষররা বিদেশের মাটিতে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। এরাই ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মানবতা বিরোধী অপরাধের সাথে জড়িত ছিল। আজও তারা মানবতা বিরোধী অপকর্মের সাথে জড়িত।
১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের স্থপতি জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে স্বপরিবারে হত্যার মাধ্যমে দেশের সংবিধান লংঘন করে ক্ষমতায় অধিষ্টিত হয়ে নিজের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে দেশে একের পর এক মানবতা বিরোধী কর্মকন্ডে লিপ্ত হন জিয়াউর রহমান।
একজন সরকারী কর্মকর্তা হয়ে দেশের সংবিধান লংঘন করে ভোটার বিহিন হাঁ-না ভোটের মাধ্যমে নিজকে দেশের প্রেসিডেণ্ট হিসেবে ঘোষনা করেন। তার সময়ে দেশে ১৯বার ক্যু হয়, কোন ধরনের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে সামরিক আইনে বিচার করে দেশের হাজার খানেক সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন কারাগারে ফাঁসির কাষ্টে ঝুলিয়ে হত্যা করেন জিয়াউর রহমান। আজ পর্জন্ত তাদের কারো লাশ পাওয়া যায়নি। তাদের সন্তানেরা এর বিচার চায়।
১৯৭৫ সালে মুক্তিযোদ্ধা খালেদ মোশাররফকেকে হত্যার মাধ্যমে জিয়াউর রহমানের হত্যার রাজনীতি শুরু। এর পর কারাগারের অভ্যন্তরে জাতীয় চারনেতাকে জিয়াউর রহমানের নির্দেশে হত্যা করা হয়। জেলহত্যা এবং স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার যাতে নাহয়, ইনডেমনিটি অ্যডিয়েন্স জারি করে বিচারের পথ রুদ্ধ করে দেয় জিয়াউর রহমান ।
২১বছর পর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার ক্ষমতাসীন হয়ে এসব হত্যার বিচার শুরু করলে ১৯৭৫ সালে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ও ১৯৭১ এর মানবতা বিরোধীরা জোটবদ্ধ হয়ে দেশে আবার সন্ত্রাস ও মানবতা বিরোধী অপরাধের পথ বেছে নেয়। জামাত-বিএনপি জোট সরকারের সময় দেশে সরকারী পৃষ্টপোষকতায় জঙ্গিবাদের বিস্থার ঘটে। জোট সরকার স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী লুৎফুজজামান বাবর , মন্ত্রী তাজ উদ্দিন এবং ১৯৭১ মানবতা বিরাধী অপরাধী চারদলীয় জোট সরকারের মন্ত্রী আলী আহসান মোজাহিদ এবং বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রত্যক্ষ মদদে আফগান ফেরত জঙ্গিরা ২০০৪সালের ২১শে আগষ্টের গ্রেনেড হামলা চালায়। হামলাকারী মুফতি হান্নানের জবানবন্দি ও সঠিক তদন্তে তা বেরিয়ে আসে। ৭৫ এর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ও ১৯৭১ এর মানবতা বিরোধী অপরাধীরা হলিঅর্টিজেন সহ দেশের অভ্যন্তরে একের পর এক জঙ্গি হামলা চালায়।
এই মানবতা বিরোধীরা দেশের সাস্প্রদায়িক সম্পৃতি বিনষ্ট করতে-রামু-সাতক্ষিরা-নাসিরনগর-যশোর সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমন চালায়। মানবতা বিরোধী অপরাধী ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত চৌধুরী মইনুদ্দিন ও ২১ আগষ্টের গ্রেনেড হামলা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমান লন্ডনে বসে দেশবিরোধী ষঢ়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে-তাদের নির্দেশে ৭১এর মানবতা বিরোধী অপরাধী ও তাদের সন্তানেরা লন্ডনে মানবাধিকারের দোহাই দিয়ে সমাবেশ করছে। আজও ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সামনে সমাবেশ করেছে। যারা এসব সংগঠনের সাথে জড়িত সকলেই স্বাধীনতা বিরোধী অনেকে ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আশায় এই পথ বেছে নিয়েছে। এরা কারা এদের চিহ্নিত করতে হবে। এসব সংগঠনের সাথে যারা জড়িত অধিকাংশই একাধিক মামলার আসমী ও দেশ থেকে পলাতক ।
বক্তারা ৭১এর মানবতা বিরোধী অপরাধী চৌধুরী মইনুদ্দিন এবং ২১শে আগষ্টের গ্রেনেড হামলা মামলার পলাতক আসামী তারেক রহমানকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করতে ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আবেদন জানান। ৩০ আগষ্ট বুধবার লন্ডন সময় সন্ধ্যা ছয় ঘটিকায় ইষ্টলন্ডনের আলতাব আলী পার্কের শহীদ মিনারে হিউম্যানরাইট এ্যলায়েন্স আয়োজিত সবাবেশে সভাপতিত্ব করেন মানবাধিকার কর্মি আব্দূল আহাদ চৌধুরী।
জামাল খানের সঞ্চালনায় অনুষ্টিত সমাবেশে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক ও মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরীফ, কমিউনিটি নেতা সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক, যুদ্ধাপরাধ বিচার মঞ্চের প্রেসিডেন্ট সাংবাদিক মতিয়ার চৌধুরী, স্যাকুলার মুভমেন্টের প্রেসিডেন্ট কাউন্সিলার পুষ্পিতা গুপ্তা, মানবাধিকার আইনজীবি ব্যারিস্টার মঞ্জু, ব্যারিষ্টার এনামুল হক, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মুল কমিটির সেক্রেটারী স্মৃতি আজাদ, সাংবাদিক উর্মি মাজহার, সাংবাদিক জোবায়ের আহমদ, বাংলাদেশ হিউম্যান রাইট কমিশন যুক্তরাজ্য শাখার সেক্রেটারী তারাউল ইসলাম, গৌররবের ৭১ এর সেক্রেটারী মিন্টু দে, নিরাপদ সড়ক চাই এর সভাপতি সেলিম চৌধুরী-যুবনেতা শফিক আহমদ,জগন্নাথপুর এডুকেশন ট্রাষ্টের সাবেক প্রেসিডেন্ট আঙ্গুর আলী, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব জালাল উদ্দিন, মারুফ চৌধুরী, নইমুদ্দিন রিয়াজ, সৈয়দ ছুরুক আলী ,ফখরুল ইসলাম মধূ, সেলিম খান, হোসনেয়ারা মতিন, নাজমা হোসাইন, হামিদা ইদ্রিস, শাহিনা আক্তার, খালেদা কোরেশী প্রমুখ।