ভারতে জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের তোলা সেলফি নিয়ে বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাইডেন সাহেব নিজেই সেলফি তুললেন শেখ হাসিনার সঙ্গে। তুলছে না? সঙ্গে আবার পুতুলও (সায়মা ওয়াজেদ পুতুল) ছিল। এই দৃশ্য দেখে বিএনপির এখন কী হবে?
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ‘বিএনপির অপরাজনীতির প্রতিবাদে’ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে নতুন একটা খবর আছে। দিল্লিতে কী হচ্ছে, জি-২০। এত দিন বিএনপি আটলান্টিকের ওপাড়ে হোয়াইট হাউসের দিকে তাকিয়ে ছিল— বাইডেন সাহেব নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আওয়ামী লীগকে হঁটিয়ে তাদের ক্ষমতায় বসাবে। এই না? কী দেখলেন আজকে?’
বিএনপি নেতারা এখন চোখে অন্ধকার দেখছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘খবর নিয়ে দেখবেন, বিএনপির নেতারা বেলা থাকতে মিছিল শেষ করে হাত-পা বিছিয়ে শুয়ে পড়েছে। একটারও ঘুম আসবে না রাতে। কী শুনলাম, কী দেখলাম, আর এখন কী হচ্ছে? বাইডেন সাহেব হাসিনার সঙ্গে ছবি তুলেছেন কেমন করে। এসব দেখে কি আর ভালো লাগছে?’
বিএনপির আন্দোলন নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এখন কোন যাত্রা, পতন যাত্রা না পশ্চাৎ যাত্রা? এখন পেছনের দিকে বিএনপিকে যেতে হচ্ছে। কোথায় বিক্ষোভ? কোথায় বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউ, উত্তাল তরঙ্গমালা? সেটা থেকে গরুর হাটে গোলাপবাগে খাদে পড়ে, তারপরে পদযাত্রা মানেই পশ্চাৎ যাত্রা। আজকের গণমিছিলের হাট যতটুকু দেখেছি, মনে হয় না জনগণ আর গণমিছিলে আসবে। জনগণ নেই, নেতাকর্মীরা আর আমেরিকার দিকে তাকাবে না। তাহলে এখন কোথায়?’
মির্জা ফখরুল ‘বৃহৎ শক্তির বলয় ক্ষেত্র হিসেবে বাংলাদেশ ব্যবহৃত হতে চলেছে’ বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তারও জবাব দেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘‘ফখরুল সাহেব কী দেখাবেন? বাংলাদেশ শক্তির বলয়ে চলে গেছে, বৃহৎ শক্তির শক্তিকেন্দ্র বাংলাদেশকে ফখরুল বলেছে। আমি বলতে চাই— এ বলয় বন্ধুত্বের বলয়, এখানে কোনও শত্রুতা নেই। জাতির পিতাই বলে গেছেন— ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়।’ এই নীতি বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনা বজায় রেখেছেন। আগামী দিনে প্রমাণ হবে শত্রুতা কারও সঙ্গে নয়, বাংলাদেশ সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব চায়।’’
বিএনপি সারা দেশে মিথ্যার মহামারি ডেকে এনেছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মিথ্যাচারের মহামারি বিএনপির দৌরাত্ম্যে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের একটা গ্রামের কর্মীকেও মিথ্যা কথা বলতে শিখিয়েছে। অবিরাম মিথ্যাচার করে যাচ্ছে।’
কাদের বলেন, ‘ফখরুল সাহেব এখন কী করবেন? সিঙ্গাপুর থেকে শলাপরামর্শ নিয়ে এসেছেন, এখানে এসে এক দফার আন্দোলন করবেন। এ আন্দোলন এখন ভুয়া। ভুয়া দল যে আন্দোলন করছে, সেটাও ভুয়া। বিএনপির বিরুদ্ধে খেলা হবে। ফাইনাল খেলা হবে। তারপর দেখা যাবে কত ধানে কত চাল। প্রস্তুত হয়ে যান। বৃষ্টি-বাদল-বর্ষায়। বাংলাদেশ লুটপাট, ষড়যন্ত্র, দুর্নীতিবাজ, স্বাধীনতাবিরোধী, জঙ্গিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়ে যাবে। খেলা হবে অবিরাম।’ শান্তি সমাবেশ আগামী নির্বাচন পর্যন্ত চলবে বলেও জানান তিনি।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোর বাংলাদেশ সফর নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগামীকাল ইউরোপের বিখ্যাত নেতা ম্যাক্রো আসছেন। কী বলবেন ফখরুল, গয়েশ্বর, আমির খসরু? ইউরোপের সবচেয়ে জাদরেল নেতা বাংলাদেশে সফরে আসছেন। এখন শুধু আসবে। এখন নেগেটিভ (নেতিবাচক) আসবে না, সব পজিটিভ (ইতিবাচক), সব পজেটিভ।’
শান্তি সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন— আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ।