সিলেটের আঞ্চলিক ভাষার নাটকের অভিনেত্রী সোনিয়া বেগমের (২০) গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নগরের শেখঘাট খুলিয়াটুলা আবাসিক এলাকার নীলিমা-১৪ নম্বর ভবনের ভাড়া বাসা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি প্রেমঘটিত কারণে ঘটে থাকতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সোনিয়া সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার কলাছড়া গ্রামের বিল্লাল আহমদের মেয়ে। তিনি দক্ষিণ সুরমা ডিগ্রি কলেজের স্নাতক প্রথমবর্ষের ছাত্রী। মা ও সৎ বাবা ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মাইজগাঁও গ্রামের সেলিম মিয়ার সঙ্গে ওই ভবনের চতুর্থ তলায় ভাড়ায় থাকতেন তারা।
নিহত সোনিয়ার পরিবারের সদস্যরা জানান, সোনিয়ার সৎ বাবা সেলিম মিয়া অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ অবস্থায় সোনিয়ার মামাতো ভাই সজিব আহমদ শনিবার রাতে সোনিয়াদের বাসায় আসেন। রোববার সকাল ৭টার দিকে সজিবসহ সোনিয়ার পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে বসে নাস্তা করেন। পরে ঘরে সোনিয়া ও তার ভাবি ফারিয়া বেগমকে রেখে পরিবারের অন্য সদস্যরা হাসপাতালে চলে যান।
এ সময় সোনিয়ার মামাতো ভাই সজিব ওই বাসায় ছিলেন। তবে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে হাসপাতালে থাকা সোনিয়ার মা অমিতা বেগমকে ফোন করে সজিব বাড়ি চলে যাচ্ছেন বলে বিদায় নেন।
দুপুর ১২টার দিকে সোনিয়ার সাড়াশব্দ না পেয়ে তার ভাবি সনিয়ার কক্ষে গিয়ে বিছানার ওপরে গলাকাটা অবস্থায় দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় হাসপাতালে থাকা পরিবারের সদস্যদের খবর দেন সোনিয়ার ভাবি। খবর পেয়ে দুপুর পৌনে ১টার দিকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহের পাশ থেকে কাপড় কাটার একটি রক্তমাখা কাঁচি জব্দ করে পুলিশ।
এ হত্যাকাণ্ডে সজিবকে সন্দেহ করছেন সোনিয়ার পরিবারের সদস্যরা। সজিবের বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার নবীনগর গ্রামে।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা দুপুরে নিহতের আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। এটি একটি লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড। মেয়েটির গলায় ধারালো কিছুর গভীর ক্ষত আছে। মরদেহের পাশ থেকে রক্তমাখা অবস্থায় কাপড় কাটার একটি কাঁচি পাওয়া গেছে।
এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ওই তরুণী টিকটকার ছিলেন বলে জানা গেছে। আমরা পুলিশ, সিআইডি, পিবিআই মিলে এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি।
সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি প্রেমঘটিত কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। মেয়েটি সিলেটি নাটক ও টিকটক ভিডিও তৈরি করতেন। ঘটনার পরপরই প্রথমে নিহতের পরিবার আমাদের অনেক তথ্য গোপন করে। পরে পুলিশের চাপে পড়ে তারা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে। এ ঘটনায় পুলিশের দু-তিনটি দল খুনিদের চিহিৃত করে গ্রেপ্তারে কাজ করছে।