বিদায়ী মে মাসে ৪৯৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭৬৯ জন। একই সময় রেলপথে ৫০টি দুর্ঘটনায় ৪৩ জন নিহত এবং সাত জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত, আট জন আহত এবং তিন জন নিখোঁজ রয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে ৫৬৪টি দুর্ঘটনায় ৫২৭ জন নিহত এবং ৭৭৯ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (১৪ জুন) বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী সই করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ পথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মে মাসে সড়কে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেলে। এ সময় ১৮৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে, যা মোট দুর্ঘটনার ৩৭ দশমিক ২৯ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৮১ জন, যা মোট নিহতের ৩৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১১৪ জন আহত হয়েছেন, যা মোট আহতের ১৪ দশমিক ৮২ শতাংশ।
এ মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এ বিভাগে ১২১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১১০ জন নিহত এবং ১৫১ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে সিলেট বিভাগে। এ বিভাগে ২৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২৮ এবং আহত হয়েছেন ৬২ জন।
সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১২ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ১৮২ জন চালক, ৯১ জন পথচারী, ৫৫ জন পরিবহন শ্রমিক, ৭৫ জন শিক্ষার্থী, ১৩ জন শিক্ষক, ৭৮ জন নারী, ৬৩ জন শিশু, চার জন সাংবাদিক, পাঁচ জন চিকিৎসক, দুই জন মুক্তিযোদ্ধা এবং আট জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। তাদের মধ্যে নিহত হয়েছেন– পাঁচ জন সেনাবাহিনীর সদস্য, ১৩৭ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৮৩ জন পথচারী, ৫৩ জন নারী, ৪৫ জন শিশু, ৩৯ জন শিক্ষার্থী, তিন জন পরিবহন শ্রমিক, সাত জন শিক্ষক, চার জন চিকিৎসক, দুই জন সাংবাদিক, দুই জন মুক্তিযোদ্ধা এবং পাঁচ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
এ সময় সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৮৭টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৮ দশমিক ০৯ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৪ দশমিক ১৬ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ বাস, ১৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৩ দশমিক ২০ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৬ দশমিক ১১ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ১৫ দশমিক ৩২ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ বিবিধ কারণে, শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ গাড়ির চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং এক দশমিক ৪১ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ২৬ দশমিক ৮১ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৩৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩০ দশমিক ০৪ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, এক দশমিক ৪১ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে এবং এক দশমিক ৪১ শতাংশ সংগঠিত হয়েছে রেলক্রসিংয়ে।