৫ দিনের টানা বর্ষণ ও মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দোয়ারাবাজারের সুরমা, চেলা, মরা চেলা, চিলাই, চলতি, কালিউরি, খাসিয়ামারাসহ বিভিন্ন নদীনালার উপচেপড়া পানিতে হাওর, খাল-বিল, মাঠঘাট ভরে গিয়ে সৃষ্ট বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন নিম্নাঞ্চলের মানুষজন।
এদিকে পাহাড়ি ঢলের তোড়ে রবিবার সন্ধ্যায় উপজেলার চিলাই নদীর রাবারড্যাম সংলগ্ন ক্যাম্পেরঘাট এলাকার আবুল কালামের বাড়ির পাশে বেড়িবাঁধ ভেঙে বগুলাবাজার ইউনিয়নের ক্যাম্পের ঘাট, আন্দাইরগাঁও, বগুলা, চান্দেরঘাট, সোনাচড়া, নোয়াগাঁও, রামনগর, তেরাকুড়ি ও কান্দাগাঁওসহ বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ওই বেড়িবাঁধ ভেঙে ঢলের তোড়ে ক্যাম্পেরঘাট এলাকার কথিত (উপরোক্ত) আবুল কালামের একটি আধাপাকা টিনশেডের ঘর ধসে যায়। এভাবে গত কয়েকবছর আগেও একই স্থানে বেড়িবাধ ভেঙে তার আরেকটি পাকাঘর বিধস্ত হয়।
এদিকে, সুরমা নদীর উপচেপড়া ঢলের তোড়ে দোয়ারাবাজার-টেংরাটিলা-মহব্বতপুর সড়কের শরিফপুর সাইডিংঘাট এলাকায় রাস্তায় হাটু সমান পানির স্রোতে যান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
অপরদিকে রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে উপজেলা সদরের সাথে নরসিংপুর, বাংলাবাজার, বগুলাবাজার, লক্ষীপুর ও সুরমা ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক যোগাযোগ। তলিয়ে গেছে রবিশস্যসহ শত শত হেক্টর আমনের বীজতলা। হুহু করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতোমধ্যে কয়েকটি মাছের পুকুর তলিয়ে যাওয়ায় শঙ্কিত রয়েছেন শতাধিক মৎস্যচাষি খামার মালিক। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তীত রয়েছে।
বগুলাবাজার এলাকার সমাজসেবী এম এইচ শাহজাহান আকন্দ জানান, অবিরাম বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলেও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তীত রয়েছে।
সুনামগঞ্জের পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার জানান, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারি বৃষ্টিপাত বন্ধ না হলে অচিরেই জেলার সকল উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।
দোয়ারাবাজারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফ মোর্শেদ মিশু জানান, বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।তবে জরুরি ক্ষেত্রে দূর্যোগ মোকাবেলায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা, ত্রাণ বিতরণসহ সর্বক্ষেত্রে আমাদের মনিটরিং ব্যবস্থা অটল রয়েছে।
এছাড়া জেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।