বঙ্গবীর জেনারেল এমএজি ওসমানী মেমোরিয়েল ফাউণ্ডেশন ইউকের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবীর জেনারেল এমএজি ওসমানীর ১০৫তম জন্মবার্ষিকী ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি পূর্ব লণ্ডনের মাইক্রো বিজনেস সেন্টারে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আলহাজ্ব কবির উদ্দিন, যৌথভাবে পরিচালনা করেন সংগঠণের সিনিয়র সহ সভাপতি কে এম আবুতাহের চৌধুরী ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল নুরুল ইসলাম খান। সভায় পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা আনোয়ার রাব্বানী।
সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মকসুদ ইবনে আজিজ লামা। তিনি বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীকে সম্মান করলে মুক্তিযুদ্ধকে সম্মান করা হবে। ওসমানী ছিলেন সততার প্রতীক। এ ধরনের সৎ ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তিকে চক্রান্ত করে ইতিহাসের পাতা থেকে কেউ মুছতে পারবে না। তাঁর নাম বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- ওসমানী ট্রাস্টের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম খান, প্রবীন সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ মান্নান, সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মোস্তফা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আমীর খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম আলী সৈয়দ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আব্দুল মাবুদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ রহমান, কমিউনিটি নেতা সৈয়দ নুরুল ইসলাম।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন ইউকের সভাপতি মুহিবুর রহমান, কাউন্সিলার ওসমান গনি, কাউন্সিলার সুলুক আহমদ, ব্যারিষ্টার নাজির আহমদ, সলিসিটর মোহাম্মদ ইয়াওর উদ্দিন, প্রভাষক আব্দুল হাই, নুরুল ইসলাম এমবিই, অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম বেপারী, মাওলানা রফিক আহমদ রফিক, মশিউর রহমান মশনু, হাজী ফারুক মিয়া, মিসেস ঝরনা চৌধুরী, আহমদ লাবিব রহমান প্রমুখ, বঙ্গবীর জেনারেল ওসমানীর নামে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কবি শিহাবুজ্জামান কামাল।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে আরো বলেন, উসমানী কলকাতা থেকে ডাঃ চ্যাটার্জিকে করিমগঞ্জে নিয়ে এসে তাঁর পায়ের সফল অপারেশনের ব্যবস্থা করেন। তিনি বাংলাদেশকে গৃহযুদ্ধ থেকে রক্ষা করেছেন ।তৎকালীন সেক্টর কমাণ্ডার জিয়াউর রহমানের জেড ফোর্স মুক্তিযুদ্ধে বিরাট ভূমিকা পালন করে। মেজর জলিল অনেক ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে যারাই অবদান রেখেছেন তাদের মূল্যায়ন করতে হবে।
বীর মুক্তিযাদ্ধা এম এ মান্নান বলেন, তিনি সিলেট ও বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের অহংকার। ওসমানী মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বে না থাকলে নয় মাসে বাংলাদেশ স্বাধীন হত না।
বীর মুক্তিযাদ্ধা মোস্তফা বলেন, তিনি ছিলেন ক্ষণজন্মা পুরুষ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ মেজর। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর রণকৌশল ও ট্রেনিং বিজয় লাভে সাহায্য করে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম খান বলেন, কোন লোভ লালসা, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। সময়ের প্রতি তিনি ছিলেন যত্নবান।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আব্দুল মাবুদ বলেন, তিনি ছিলেন জাতির এক রোল মডেল। তিনি ছিলেন অসীম সাহসিকতা, নিয়মানুবর্তিতা, সততা ও নিষ্ঠার প্রতীক। তাঁর সাথে বিমাতাসুলভ আচরণ করা হচ্ছে।
সাবেক কাউন্সিলার ও ডেপুটি স্পীকার ব্যারিষ্টার নাজির আহমদ বলেন, বঙ্গবীর ওসমানীর প্রতি পাকিস্তানী শাসকরা অবিচার করেছে। বাংলাদেশেও তিনি আজ উপেক্ষিত। নতুন প্রজন্মের কাছে ওসমানীর অবদান তুলে ধরতে হবে। পাঠ্য পুস্তকে ওসমানীর জীবনী অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
সভায় বক্তারা আরো বলেন বঙ্গবীর জেনারেল এমএজি ওসমানীর নামে মিলিটারি একাডেমি প্রতিষ্ঠা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। বঙ্গবীর জেনারেল এমএজি ওসমানী মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সিলেটের প্রবেশপথে একটি ওসমানী মেমোরিয়াল টাওয়ার প্রতিষ্ঠা করার জন্য দাবি জানানো হয়। রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের অভিজ্ঞতার কথা উপস্থাপন করেন। মাওলানা জিল্লুর রহমানের মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্তি হয়।